ভ্রমণের তাগিদেই হোক কিংবা যেকোনো কাজের তাগিদেই হোক, ঢাকা হতে চট্রগ্রামে অনেকেরই যাওয়ার প্রয়োজন হয়। প্রতিদিন ঢাকা হতে চট্রগ্রাম রুটে অধিক মানুষ যাতায়াত করে। তাই তো এই রুটটাকে দেশের অন্যতম ব্যাস্ততম ট্রেন রুট বলা হয়। ফলস্বরূপ ঢাকা টু চট্রগ্রাম রুটে বেশ কয়েকটি আন্তনগর ও লোকাল ট্রেন নিয়মিত চলাচল করে।
ঢাকা টু চট্টগ্রাম ট্রেনের সময়সূচী ও ভাড়া |
ঢাকা টু চট্রগ্রাম ভ্রমণের ক্ষেত্রে অধিকাংশই ট্রেনকেই বেঁচে নেয়। কারণ এই রুটে রেল ভ্রমণ বেশ আরামের। বাস ভ্রমণের থেকে অধিক পরিমাণে বেশি সুবিধাজনক ট্রেন ভ্রমণ হওয়ায় অনেকে ট্রেনকেই বেঁচে নেয় ভ্রমণসঙ্গী হিসেবে।
চট্রগ্রাম শিল্পনগরী এবং চট্রগ্রামের ওদিকে পার্বত্য চট্রগ্রামে অধিক জনপ্রিয় পর্যটন স্থান এবং ভ্রমণপ্রিয় স্থান থাকার দরুন প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ চট্রগ্রামে আসে ভ্রমণ করতে। কেউ বা আসে কাজের খোঁজে। তাদের অধিকাংশেই আসে ট্রেনে।
ঢাকা টু চট্রগ্রাম কিংবা চট্রগ্রাম টু ঢাকা ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রথমেই জানা দরকার ঢাকা টু চট্রগ্রাম ট্রেনের সময়সূচী ও ভাড়ার তালিকা। এই পোস্টে আমরা জানবো ঢাকা টু চট্রগ্রাম রুটে চলমান সকল ট্রেনের সময়সূচী, ভাড়া তালিকা, কখন ছাড়ে এবং কখন পৌঁছে সহ যাবতীয় বিস্তারিত তথ্য। কারণ ঢাকা হতে চট্রগ্রাম ভ্রমণের ক্ষেত্রে এটা জানা আবশ্যক।
ঢাকা টু চট্টগ্রাম আন্তনগর ট্রেনের সময়সূচী
ঢাকা হতে চট্রগ্রাম রুটে মোটে ৫টি আন্তনগর ট্রেন নিয়মিত চলাচল করে। এ সকল ট্রেনের সার্ভিস অনেক ভালো এবং সেই সাথে অধিক নিরাপদ। নিম্নে ঢাকা টু চট্রগ্রাম আন্তনগর ট্রেনের সময়সূচী দেয়া হলোঃ
তূর্ণা এক্সপ্রেস (৭৪২)
তূর্ণা এক্সপ্রেস চট্রগ্রাম রুটে চলমান জনপ্রিয় একটি আন্তনগর ট্রেন। এই ট্রেনটির সাপ্তাহিক কোনো ছুটির দিন নেই। প্রতিদিন তূর্ণা এক্সপ্রেস ঢাকা টু চট্রগ্রাম রুটে চলাচল করে। তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে রাত ১১টা ৩০ মিনিটে এবং চট্রগ্রামে পৌঁছায় ভোঁর ৬টা ২০ মিনিটে।
ট্রেনের নাম | ঢাকা হতে ছাড়ার সময় | চট্রগ্রামে পৌঁছানোর সময় | ছুটির দিন |
---|---|---|---|
তূর্ণা এক্সপ্রেস | রাত ১১ঃ৩০ | ভোঁর ৬ঃ২০ | রবিবার |
মহানগর এক্সপ্রেস (৭৭২)
মহানগর এক্সপ্রেস চট্রগ্রাম রুটে চলমান জনপ্রিয় একটি আন্তনগর ট্রেন। এই ট্রেনটির সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলো রবিবার। রবিবার ব্যাতিত সকল দিন মহানগর এক্সপ্রেস যাত্রা করে। প্রতিদিন মহানগর এক্সপ্রেস ঢাকা টু চট্রগ্রাম রুটে চলাচল করে। মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে রাত ৯টা ২০ মিনিটে এবং চট্রগ্রামে পৌঁছায় ভোঁর ৪টা ৫০ মিনিটে।
ট্রেনের নাম | ঢাকা হতে ছাড়ার সময় | চট্রগ্রামে পৌঁছানোর সময় | ছুটির দিন |
---|---|---|---|
মহানগর এক্সপ্রেস | সকাল ১১ঃ৩০ | ভোঁর ৬ঃ২০ | রবিবার |
মহানগর প্রভাতী/গোধুলী এক্সপ্রেস (৭০৪)
মহানগর প্রভাতী চট্রগ্রাম রুটে চলমান জনপ্রিয় একটি আন্তনগর ট্রেন। এই ট্রেনটির সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলো রবিবার। রবিবার ব্যাতিত সকল দিন মহানগর প্রভাতী যাত্রা করে। প্রতিদিন মহানগর প্রভাতী ঢাকা টু চট্রগ্রাম রুটে চলাচল করে। মহানগর প্রভাতী ট্রেনটি ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে এবং চট্রগ্রামে পৌঁছায় দুপুর ২টায়।
ট্রেনের নাম | ঢাকা হতে ছাড়ার সময় | চট্রগ্রামে পৌঁছানোর সময় | ছুটির দিন |
---|---|---|---|
মহানগর প্রভাতী | সকাল ৭ঃ১৫ | দুপুর ২ঃ০০ | রবিবার |
সুবর্ণ এক্সপ্রেস (৭০১)
সুবর্ণ এক্সপ্রেস চট্রগ্রাম রুটে চলমান জনপ্রিয় একটি আন্তনগর ট্রেন। এই ট্রেনটির সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলো সোমবার। সোমবার ব্যাতিত সকল দিন সুবর্ণ এক্সপ্রেস যাত্রা করে। প্রতিদিন সুবর্ণ এক্সপ্রেস ঢাকা টু চট্রগ্রাম রুটে চলাচল করে। সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে এবং চট্রগ্রামে পৌঁছায় রাত ৯টা ৫০ মিনিটে।
সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি বাংলাদেশের প্রথম বিরতিহীন ট্রেন। সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের সবথেকে বড় বৈশিষ্ঠ্য হলো এই ট্রেনটি ঢাকা বিমানবন্দর ব্যাতিত কোথাও থামে না।
ট্রেনের নাম | ঢাকা হতে ছাড়ার সময় | চট্রগ্রামে পৌঁছানোর সময় | ছুটির দিন |
---|---|---|---|
সুবর্ণ এক্সপ্রেস | বিকাল ৪.৩০ | রাত ৯.৫০ | নেই |
সোনার বাংলা এক্সপ্রেস (৭৮৮)
সোনার বাংলা এক্সপ্রেস চট্রগ্রাম রুটে চলমান জনপ্রিয় একটি আন্তনগর ট্রেন। এই ট্রেনটির সপ্তাহে একদিন বন্ধের দিন রয়েছে। বুধবার ব্যাতিত প্রতিদিন সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ঢাকা টু চট্রগ্রাম রুটে চলাচল করে। সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে সকাল ৭টা এবং চট্রগ্রামে পৌঁছায় ১২.১৫ মিনিটে।
ট্রেনের নাম | ঢাকা হতে ছাড়ার সময় | চট্রগ্রামে পৌঁছানোর সময় | ছুটির দিন |
---|---|---|---|
সোনার বাংলা এক্সপ্রেস | সকাল ৭ঃ০০ | দুপুর ১২ঃ১৫ | বুধবার |
ঢাকা টু চট্টগ্রাম মেইল ট্রেনের সময়সূচী
ঢাকা হতে চট্রগ্রাম রুটে মোটে ৩টি মেইল ট্রেন চলাচল করে সেই ট্রেনগুলি হলো, কর্ণফুলি এক্সপ্রেস, চিটাগাং মেইল এবং চট্রলা এক্সপ্রেস।
কর্ণফুলি এক্সপ্রেস
কর্ণফুলি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা হতে চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে সকাল ৮.৪৫ মিনিটে এবং চট্রগ্রামে পৌঁছে সন্ধ্যা ৬ঃ১৫ মিনিটে। এই ট্রেনটির কোনো সাপ্তাহিক ছুটির দিন নেই। সপ্তাহের সাত দিনই এই ট্রেনটি চলাচল করে।
চিটাগাং মেইল
চিটাগাং মেইল ট্রেনটি ঢাকা হতে চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে রাত ১০.৩০ মিনিটে এবং চট্রগ্রামে পৌঁছে সকাল ৭.১৫ মিনিটে। এই ট্রেনটির কোনো সাপ্তাহিক ছুটির দিন নেই। সপ্তাহের সাত দিনই এই ট্রেনটি চলাচল করে।
চট্রলা এক্সপ্রেস
কর্ণফুলি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা হতে চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে দুপুর ১.০০ মিনিটে এবং চট্রগ্রামে পৌঁছে রাত ৮.৩০ মিনিটে। এই ট্রেনটির সাপ্তাহিক ছুটির দিন মঙ্গলবার। মঙ্গলবার ব্যাতিত এই ট্রেনটি নিয়মিত চলাচল করে।
ঢাকা টু চট্টগ্রাম ট্রেনের ভাড়া
এতক্ষণ আমরা ঢাকা টু চট্টগ্রাম ট্রেনের সময়সূচী কখন ছাড়ে, কখন পৌঁছে এসব জানলাম, কিন্তু আমরা এখন ও অবধি ভাড়া জানলাম না। আমরা কমবেশি সবাই জানি, বাংলাদেশের ট্রেনগুলিতে বিভিন্ন শ্রেণির আসন থাকে। এসব আসনে শ্রেণিভেদে ভাড়া ভিন্নরকম। যার ফলে ভাড়া তালিকা পৃথকভাবে দেয়া হচ্ছে। নিচে ঢাকা টু চট্টগ্রাম ট্রেনের ভাড়া তালিকা দেয়া হলোঃ
আসন | ভাড়া |
---|---|
২ইয় শ্রেণী সাধারণ | ৯০টাকা |
২য় শ্রেণী মেইল | ১১৫ টাকা |
কমিউটার | ১৪৫ টাকা |
সুলভ | ১৭৫ টাকা |
শোভন | ২৮৫ টাকা |
শোভন চেয়ার | ৩৪৫ টাকা |
১ম শ্রেণী চেয়ার | ৪৬০ টাকা |
স্নিগ্ধা | ৬৫৬ টাকা |
১ম শ্রেণী কেবিন | ৬৮৫ |
এসি আসন | ৭৮৮ টাকা |
এসি কেবিন | ১১৭৯ টাকা |
শেষ কথা
আশাকরি এই পোস্টটি থেকে আপনি ঢাকা টু চট্রগ্রাম ট্রেনের সময়সূচী বৃত্তান্ত যাবতীয় তথ্য পেয়েছেন। আপনি যদি ঢাকা থেকে চট্রগ্রাম ট্রেনে যেতে চান, সেক্ষেত্রে আন্তনগর ট্রেনের ক্ষেত্রে টিকিট আগাম কেটে নিন অনলাইন থেকে। সেই সাথে ট্রেন ছাড়ার সময় দেখে নিতে ভুলবেন না।
আপনার যাত্রা শুভ হোক!
এই পোস্টটি বিষয়ে আপনার যদি কোনো মন্তব্য থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করুণ। অতি দ্রুত রিপ্লাই পাবেন।